গ্রাম আদালতেরবিধিমালা, ১৯৭৬
------------------------------------------------------------------
বিধি-১(সংক্ষিপ্ত নাম ও প্রারম্ভ)
অত্র বিধিমালা ১৯৭৬ সনের গ্রাম আদালত বিধিমালা নামেঅভিহিত হইবে ।
বিধি-২( বিষয়বস্তু বা প্রসংগে বিপরীত কিছু নাথাকিলে অত্র বিধিমালায়)
(ক) ''ফরম'' বলিতে অত্র বিধিমালার সহিত সংযোজিত ফরমবুঝাইবে ।
(খ) ''অধ্যাদেশ'' বলিতে ১৯৭৬ সনের গ্রাম আদালত''অধ্যাদেশ (১৯৭৬ সনের ৬১ নং অধ্যাদেশ) বুঝাইবে;
(গ) 'খণ্ড'বলিতে অধ্যাদেশের তফসিলের কোনো খণ্ডবুঝাইবে;
(ঘ) ''আবেদনকারী'' বলিতে যে ব্যক্তি অধ্যাদেশের ৪ধারা অনুসারে কোনো দরখাস্ত করে, তাহাকে বুঝাইবে;
(ঙ) ''প্রতিবাদী'' বলিতে যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেহঅধ্যাদেশের ৪ ধারা অনুসারে কোনো দরখাস্ত করে, তাহাকে বুঝাইবে; এবং
(চ) 'ধারা'বলিতে অধ্যাদেশের কোনো ধারা বুঝাইবে।
বিধি-৩: (১) ৪ ধারার (১) উপধারা অনুসারে কোনো দরখাস্ত লিখিতভাবে করিতে হইবে এবং উহাআবেদনকারী কতৃর্ক স্বাক্ষরিত হইবে ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট দাখিল করিতেহইবে ।
(২) উপবিধি (১) অনুসারে লিখিত দরখাস্তে নিম্নলিখিতবিবরণগুলি থাকিতে হইবে; যথাঃ
(ক)যে ইউনিয়ন পরিষদে দরখাস্ত করা হইতেছে উহার নাম;
(খ)আবেদনকারীর নাম, পরিচয় ও বাসস্থান;
(গ)প্রতিবাদীর নাম, পরিচয় ও বাসস্থান;
(ঘ)যে ইউনিয়নে অপরাধ সংঘটিত বা নালিশের কারণ উদ্ভবহইয়াছে উহার নাম;
(ঙ)নালিশ অথবা দাবির প্রকৃতি ও তায়দাদ, সংক্ষিপ্তবর্ণনাসহ; এবং
(চ)যেই সমস্ত প্রতিকার দাবি করা হইতেছে।
(৩) এই বিধি অনুসারে দরখাস্ত তফসিলের প্রথম খন্ডসংক্রান্ত হইলে দুই টাকা ফী এবং দ্বিতীয় খণ্ড সংক্রান্ত হইলে চার টাকা ফী দরখাস্তেরসহিত দাখিল করিতে হইবে।
বিধি-৪:ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যখন ৪ ধারার (১) উপধারা অনুসারে দরখাস্ত প্রত্যাখ্যানকরিবেন, তখন উহার উপর প্রদত্ত আদেশ সহকারে দরখাস্তটি আবেদনকারীর নিকট ফেরত দিতেহইবে ।
বিধি-৫:(১) প্রত্যাখ্যানের তারিখ হইতে ৩০ দিনের মধ্যে ৪ ধারার (২) উপধারা অনুসারে রিভিশনেরদরখাস্ত এখতিয়ারসম্পন্ন সহকারী জজ-এর নিকট দাখিল করিতে হইবে।
(২) উপবিধি (১) অনুসারে দরখাস্ত লিখিত ও বাদীকতৃর্কস্বাক্ষরিত হইতে হইবে। উহাতে পক্ষগণের নাম, বিবরণ ও ঠিকানা থাকিতে হইবে এবং ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যান যে মূল দরখাস্ত প্রত্যাখান করিয়া ফেরত দিয়াছিলেন তাহাও এইদরখাস্তের সহিত দাখিল করিতে হইবে। যেই সকল হেতুবাদে রিভিশন দরখাস্ত করা হইতেছে, সংক্ষেপে তাহাও দরখাস্তে উল্লেখ করিতেহইবে ।
বিধি-৬:যে সহকারী জজের নিকটে ৪ ধারার (২) উপধারাঅনুসারে দরখাস্ত করা হইবে, তিনি যদি এইরূপ অভিমত পোষণ করেন যে, ইউনিয়ন পরিষদেরচেয়ারম্যান কতৃর্ক প্রদত্ত আদেশটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বা বহুলাংশে অন্যায়, তবে তিনিদরখাস্ত গ্রহণ করার জন্য চেয়ারম্যানের প্রতিনির্র্দেশ সম্বলিত লিখিত আদেশ দান করিবেনএবং অনুরূপ আদেশসহ আবেদনকারীকে উহা ফেরত দিবেন।
বিধি-৭:(১) আবেদন গৃহীত হইলে ১নং ফরমে রক্ষিত রেজিস্টারে উহার বিবরণসমূহ লিপিবদ্ধ করিতেহইবে এবং উক্ত রেজিস্টারে মামলার যে নম্বর ও বত্সর লিপিবদ্ধ হইবে, তাহা দরখাস্তেরউপরেও লিখিতে হইবে।
(২) যখন ৮ ধারার (২) উপধারা অনুসারে থানাম্যাজিস্ট্রেট বা সহকারী জজ কোন মামলা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাইবেন, তখন তাহা১নং ফরম রেজিস্টারে নূতন করিয়া তালিকাভুক্ত করিতে হইবে এবং নূতন মামলা হিসাবে উহারশুনানি করিতে হইবে।
বিধি-৮: (১) ৭ বিধি অনুসারে দরখাস্ত রেজিস্ট্রিকরিবার পর চেয়ারম্যান একটি নির্দিষ্ট তারিখে ও সময়ে হাজির হওয়ার জন্য আবেদনকারীকেনির্দেশ দিবেন এবং উক্ত নির্দিষ্ট তারিখে ও সময়ে হাজির হওয়ার জন্য প্রতিবাদীকে সমনদিবেন ।
(২) এই বিধিমালা অনুসারে প্রদত্ত সকল সমন দুইপ্রস্থে লিখিত এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকতৃর্ক স্বাক্ষরিত ও সীলমোহরাঙ্কিতহইকে হইবে, এবং গ্রাম আদালত গঠিত হওয়ার পর গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানকতৃর্কস্বাক্ষরিত ও সীলমোহরাঙ্কিত হইতে হইবে।
(৩) যেক্ষেত্রে অন্যরূপ বিধান করা হইবে তদ্ব্যতীতসকল ক্ষেত্রে অত্র বিধিমালা অনুসারে প্রদত্ত প্রত্যেকটি সমন ইউনিয়ন পরিষদের একজনকমচারী কতৃর্ক অথবা ইউনিয়ন পরিষদ বা গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানকতৃর্ক এতদুদ্দেশ্যেনিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকতৃর্ক জারিকৃত হইতে হইবে।
(৪) সমন দ্বারা যে ব্যক্তিকে আহবান করা হইয়াছে, সম্ভব হইলে ব্যক্তিগতভাবে সেই ব্যক্তির হাতে দুই প্রস্থ সমনের এক প্রস্থ অর্পণেরদ্বারা সমন জারি করিতে হইবে।
(৫) যাহার উপর সমন জারি করা হইবে, সেইরূপ প্রত্যেকব্যক্তি সমনের অপর প্রস্থের বিপরীত পৃষ্ঠায় স্বাক্ষরের দ্বারা প্রাপ্তি স্বীকারকরিবে ।
(৬) যথারীতি চেষ্টা করিয়াও যদি উপরোক্ত উপধারাসমূহেরবর্ণিত উপায়ে সমন জারি করা সম্ভব না হয়, তাহা হইলে সমন প্রাপক যে গৃহে সচরাচর বসবাসকরে, সমন জারি কারক কর্মচারী সেই গৃহের কোনো প্রকাশ্য অংশ এক প্রস্থ সমন লটকাইয়া দিবেএবং তদ্বারা সমন যথাবিহিতরূপে জারি হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।
(৭) যে ব্যক্তির নামে সমন দেওয়া হইয়াছে, সেই ব্যক্তিযদি সেই ইউনিয়ন পরিষদের এখতিয়ারবহির্ভুত স্থানে বসবাস করে তবে ইউনিয়ন পরিষদের বাগ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান ডাকযোগে (প্রাপ্তি স্বীকারের খরচসহ) রেজিস্ট্রি করিয়া সমনজারি করাইতে পারিবে এবং আবেদনকারীকে উহার খরচ বহন করিতে হইবে।
বিধি-৯:(১) প্রতিবাদীর প্রতি সমন ২নং ফরমে দিতে হইবে।
(২) সাক্ষীর প্রতি সমন ৩নং ফরমে দিতে হইবে।
বিধি-১০:প্রতিবাদীর উপর সমন জারি হইবার পর ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যান পক্ষগণকে সাত দিনের মধ্যে তাহাদের সদস্য মনোনয়ন করিতে বলিবে, এবং অনুরূপভাবে মনোনীত সদস্যবৃন্দ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে লইয়া গ্রাম আদালতগঠিত হইবে ।
বিধি-১১:সদস্যগণের নাম প্রাপ্ত হইবার পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ১নং ফরমের রেজিস্টারেরসংক্ষিপ্ত কলামে উক্ত সদস্যগণের নাম লিপিবদ্ধ করিবে।
বিধি-১২:(১) যেক্ষেত্রে গ্রাম আদালত কোনো মামলা কোনো মামলার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পূর্বে যেকোনো সময়ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ৫ ধারার (২) উপধারায়বর্ণিত কোনো কারণে গ্রাম আদালতেরচেয়ারম্যান হিসাবে কাজ করিতে অপরাগ হয়, অথবা কোনো পক্ষ তাহার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করে, সেই ক্ষেত্রে থানানির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদেরচেয়ারম্যানের নিকট হইতে সংবাদ পাইলে অথবা কোনো পক্ষের নিকট হইতে লিখিত দরখাস্ত পাইলেগ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের যেকোনো সদস্যকে কোনোপক্ষ যে সদস্যকে তদীয় সদস্যরূপে মনোনীত করিয়াছে সেই সদস্য (ব্যতীত) নিযুক্ত করিতেপারিবেন ।
(২) উপবিধি (১) অনুসারে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যাননিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত থানানির্বাহী অফিসার গ্রাম আদালতের কার্যক্রম স্থগিত রাখিতেপারিবেন ।
(৩) উপবিধি (১) অনুসারে নিযুক্ত গ্রাম আদালতেরচেয়ারম্যানের নাম ১নং ফরম রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
বিধি-১৩:গ্রাম আদালত গঠিত হইবার পর গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান তিন দিনের মধ্যে দরখাস্তেরবিরুদ্ধে লিখিত আপত্তি দাখিল করার জন্য প্রতিবাদীকেনির্দেশ দিবেন এবং গ্রাম আদালতেরঅধিবেশন অনুষ্ঠানের জন্য একটি দিন সময় ও স্থান ধার্য করিবেন এবং পক্ষগণকে নিজ নিজবক্তব্যের সমর্থনে প্রযোজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করারনির্দেশ দিতে পারিবেন।
বিধি-১৪:(১) গ্রাম আদালত ১৩ বিধি অনুসারে ধার্য তারিখে মামলার বিচার করিবে, কিন্তু উপযুক্তকারণে আদালত বিভিন্ন সময়ে মামলার শুনানি মুলতবী করিতে পারিবে, তবে একেবারে অনুরূপমুলতবীর মেয়াদ সাত দিনের অধিক হইবে না।
(২) গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান সাক্ষীগণকে হলফ বা শপথকরিয়া জবানবন্দি করিতে বলিবেন এবং জবানবন্দির সারমর্ম লিপিবদ্ধ করিবেন বা করাইবেন।
(৩) গ্রাম আদালত কোনো বিষয়সম্পর্কে পক্ষগণের মধ্যেবিরোধের ব্যাপারে মামলার যেকোনোপর্যায়ে সরেজমিনে তদন্ত অনুষ্ঠান করিতে পারিবে।
বিধি-১৫:(১) যদি কোনো মামলায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট হাজির হওয়ার জন্য নির্ধারিততারিখে, অথবা গ্রাম আদালতে মামলার শুনানির জন্য নির্ধারিত তারিখে বাদী হাজির না হয়, এবং ইউনিয়ন পরিষদের বা গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান যদি এইরূপ মত পোষণ করেন যে, বাদীতাহার মামলা পরিচালনায় গাফিলতি করিতেছে তবে তাহার ত্রুটির জন্য দরখাস্ত খারিজ করাহইবে ।
(২) যেক্ষেত্রে উপবিধি (১) অনুসারে দরখাস্ত খারিজহয়, সেইক্ষেত্রে মামলা পুনর্বহাল করার জন্য বাদী মামলা খারিজের তারিখ হইতে ১০ দিনেরমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের বা গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করিতেপারিবে, এবং উক্ত চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আবেদনকারী হাজির না হওয়ারউপযুক্ত কারণ ছিল এবং সে অবেহলার সহিত কাজ করেন নাই, তবে চেয়ারম্যান আবেদনকারীরদরখাস্ত পুনর্বহাল করিতে ও উহা শুনানির জন্য একটি তারিখ ধার্য করিতে পারিবেন।
বিধি-১৬:(১) যদি কোনো মামলা গ্রামআদালতে শুনানির জন্য ধার্য তারিখে প্রতিবাদী হাজির না হয়, এবং গ্রাম আদালতেরচেয়ারম্যান যদি এইরূপ মত পোষণ করেন যে, সে গাফিলতি করিয়াছে, তবে প্রতিবাদীরঅনুপস্থিতিতেই মামলার শুনানি করিয়া নিষ্পত্তি করা হইবে।
(২) যেক্ষেত্রে কোনো মামলায় উপবিধি (১) অনুসারেপ্রতিবাদীর অনুপস্থিতিতেই শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রতিবাদীর বিরুদ্ধে নিষ্পত্তিহয়, সেই ক্ষেত্রে প্রতিবাদী মামলা পুনর্বহাল করার জন্য উক্ত সিদ্ধান্তের তারিখ হইতে১০ দিনের মধ্যে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করিতে পারিবে, এবংচেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, তাহার হাজির না হওয়ার উপযুক্ত কারণ ছিল এবংসে অবহেলার সহিত কাজ করে নাই, তবে চেয়ারম্যান মামলা পুনর্বহাল করিতে ও উহার শুনানিরজন্য একটি তারিখ ধার্য করিতে পারিবেন।
বিধি-১৭:(১) গ্রাম আদালতেরসিদ্ধান্ত আদালতের চেয়ারম্যান ১নং ফরম রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবেন।
(২) উপবিধি (১) অনুসারে লিপিবদ্ধ প্রত্যেকটিসিদ্ধান্তে উল্লেখ থাকিবে যে, সিদ্ধান্তটি সর্বসম্মত কিনা, এবং যদি সর্বসম্মত না হয়, তবে যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অনুপাতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইয়াছে, উহার উল্লেখ থাকিবে।
বিধি-১৮:গ্রাম আদালতের প্রত্যেকটিসিদ্ধান্ত আদালতের চেয়ারম্যান প্রকাশ্য আদালতে গোষণা করিবেন।
বিধি-১৯:(১) ৮ ধারার (২) উপধারাঅনুসারে দরখাস্ত লিখিত হইতে হইবে, আবেদনকারীকতৃর্ক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে, এবংতাহাতে পক্ষগণের নাম, বিবরণ ও ঠিকানা উল্লেখ করিতে হইবে, এবং তাহাতে পক্ষগণের নাম, বিবরণ ও ঠিকানা উল্লেখ করিতে হইবে এবং দরখাস্তের হেতুবাদগুলিও সংক্ষেপে উল্লেখকরিতে হইবে ।
(২) গ্রাম আদালতের প্রদত্ত ডিক্রি বা আদেশের একটিঅনুলিপি আদালতের চেয়ারম্যানকতৃর্ক সহিমোহরাঙ্কিত করিয়া দরখাস্তের সহিত সংযোজিতকরিয়া দিতে হইবে।
বিধি-২০:প্রত্যেক মামলা নিষ্পত্তিহওয়ার পর ৪নং ফরমে একটি ডিক্রি প্রস্তুত করিতে হইবে এবং গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানকতৃর্ক তাহা স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
বিধি-২১:(১) ইউনিয়ন পরিষদেরচেয়ারম্যান ৫নং ফরমে ডিক্রিসমূহের রেজিস্টারে বিবরণ লিপিবদ্ধ করিবেন।
(২) ৮ ধারার (২) উপধারা অনুসারে থানা ম্যাজিস্ট্রেটঅথবা সহকারী জজ যে আদেশ দান করিবেন, তাহা যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদেরচেয়ারম্যানকে অবগত করা হইবে এবং তদনুসারে চেয়ারম্যান ডিক্রি আদেশ সংশোধন করিবেন এইসম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিষয় ৫নং ফরমে ডিক্রিসমূহের রেজিস্টারেও লিপিবদ্ধ করিবেন।
বিধি-২২:ডিক্রির টাকা বাক্ষতিপূরণের টাকা কতদিনের মধ্যে পরিশোধ করিতে হইবে, তাহা গ্রাম আদালতই স্থির করিবে। এই সময়ের মেয়াদ কোনোক্রমেই চূড়ান্ত আদেশের তারিখ হইতে ছয় মাসের অধিক হইবে না।
বিধি-২৩:কোনো বিরোধের যে কোনো পক্ষেরআবেদনক্রমে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান, অথবা যেক্ষেত্রে গ্রাম আদালত নাই, সেইক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পঁচাত্তর পয়সা ফী আদায় করিয়া বিরোধ সম্পর্র্কে গ্রাম আদালতের নথিপত্রপরিদর্শন করিবার অনুমতি দান করিবেন।
বিধি-২৪:বিরোধের কোনো পক্ষেরআবেদনক্রমে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান, অথবা যেক্ষেত্রে গ্রাম আদালত নাই, সেইক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রতি একশত শব্দ বা উহার অংশের অন্য পঞ্চাশপয়সা হিসাবে আদায় করিয়া প্রাসংগিক কোনো নথি অথবা অত্র বিধিমালা অনুসারে রক্ষিত কোনোরেজিস্টারে লিপিবদ্ধ কোনো বিষয়ের বা উহার অংশবিশেষের নকল সরবরাহ করিবেন।
বিধি-২৫:(১) যখনই ১০ বা ১১ ধারাঅনুসারে ধার্য কোনো জরিমানা ১২ ধারা অনুসারে আদায় করা হয়, অথবা অত্র বিধিমালা অনুসারেকোনো ফী আদায় করা হয়, তখন ৬নং ফরমে উহার রশিদ দেওয়া হইবে, যাহাতে ক্রমিক নম্বরথাকিবে, এবং তাহার মুড়ি অংশ ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে রাখা হইবে।
(২) অত্র বিধিমালা অনুসারে প্রাপ্ত সকল জরিমানা ও ফী৭নং ফরমে একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হইবে।
বিধি-২৬:অত্র বিধিমালা অনুসারে দেয়সকল ফী ইউনিয়ন পরিষদ তহবিলের অংশরূপে পরিগণিত হইবে।
বিধি-২৭:মামলার রেজিস্টার এবংডিক্রি ও আদেশের রেজিস্টারে প্রতি বত্সর গৃহীত হওয়া দরখাস্তের ক্রমানুসারে ও প্রতিবত্সর প্রদত্ত ডিক্রি বা আদেশের ক্রমানুসারে সেইগুলির ক্রমিক নম্বর দেওয়া হইবে।
বিধি-২৮:গ্রাম আদালতের রেজিস্টারসহযাবতীয় নথিপত্র ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে জমা দেওয়া হইবে এবং রেজিস্টারসমূহ দশ বত্সরপর্যন্ত ও অন্যান্য নথিপত্র তিন বত্সর পর্যন্ত সংরক্ষিত রাখা হইবে।
বিধি-২৯:যেক্ষেত্রে ৯ ধারা (৩)উপধারা অনুসারে কোনো অর্থ আদায় করিতে হইবে, সেই ক্ষেত্রে বকেয়া ভূমি রাজস্ব হিসাবেউহা আদায় করার জন্য গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান ৮নং ফরমে উহার বিবরণ থানানির্বাহীঅফিসের নিকট প্রেরণ করিবেন।
বিধি-৩০: ১২ ধারার (১) উপধারাঅনুসারে যে জরিমানা আদায় করিতে হইবে উহার পরিমাণ উল্লেখ করিয়া প্রদত্ত আদেশ ৯নংফরমে থানা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
বিধি-৩১:ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানপ্রতি বত্সর পহেলা ফেব্রুয়ারি ও পহেলা আগস্টের পূর্বে গ্রাম আদালতসমূহের যথাক্রমে৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস এবং ৩০শে জুন পর্যন্ত ছয় মাসের কার্যাবলীর রিটার্ন ১০নং ফরমে থানানির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবেন।
বিধি-৩২:যখন কোনো গ্রাম আদালত এইরূপঅভিমত পোষণ করে যে, উহার বিচারাধীন কোনো মামলার ন্যাবিচারের খাতিরে আসামীর শাস্তিহওয়া বাঞ্ছনীয়; তখন গ্রাম আদালত ১১নং ফরমে উক্ত মামলা ফৌজদারী আদালতে প্রেরণ করিতেপারিবে ।
বিধি-৩৩:যখন সমন অনুসারে বাঅন্যভাবে প্রতিবাদী হাজির হইয়া আবেদনকারীর দাবি বা বিরোধ স্বীকার করে এবং ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে দাবি মিটাইয়া দেয় তখন কোনো গ্রাম আদালত গঠন করাহইবে না ।
বিধি-৩৪:যখন গ্রাম আদালত অথবাইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোনো পক্ষকে দেয় কোনো অর্থ গ্রহণ করেন, তখন সংশ্লিষ্টপক্ষের আবেদনের তারিখ হইতে সম্ভব হইলে সাত দিনের মধ্যে সেই অর্থ তাহাকে প্রদান করিতেহইবে ।
বিধি-৩৫:(১) প্রত্যেক ইউনিয়নপরিষদের অফিসে গ্রাম আদালতের একটি সীলমোহর রাখিতে হইবে, যাহা বৃত্তাকার হইবে এবংযাহাতে গ্রাম আদালত কথাগুলিও ইউনিয়ন পরিষদের নাম অঙ্কিত থাকিবে।
(২) অত্র বিধিমালা অনুসারে প্রদত্ত সকল সমন আদেশডিক্রি, নকল ও অন্যান্য কাগজপত্রে গ্রাম আদালতের সীলমোহর ব্যবহৃত হইবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস